ফ্রিল্যান্সিং জগতে রেন্ট-এ-কোডার (RentACoder) বহুল পরিচিত একটি নাম। বিশেষ করে প্রোগ্রামারদের কাছে এটি অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি মার্কেটপ্লেস। গত জুন মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে রেন্ট-এ-কোডারের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয়েছে ভি-ওয়ার্কার (vWorker) বা ভার্চুয়াল ওয়ার্কার। সাইটের নতুন ঠিকানা হচ্ছেwww.vWorker.com। নামের পাশাপাশি সাইটের লোগো, ডিজাইন এবং আভ্যন্তরীণ বৈশিষ্ট্যে আনা হয়েছে নানা উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন।
২০০১ সালে রেন্ট-এ-কোডার যখন প্রতিষ্ঠিত হয় তখন তাদের মূল লক্ষ্য ছিল প্রোগ্রামার বা কোডারদের জন্য একটি মার্কেটপ্লেসের ব্যবস্থা করা। ২০১০ সালে এসে সাইটটি এখন আর কেবলমাত্র কোডারদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং তা গ্রাফিক্স ডিজাইনার, লেখক, অনুবাদক, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর এবং আরো অসংখ্য পেশাজীবিদের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। তাই আজ সেই সকল ফ্রিল্যান্সারদেরকে আর কোডার (Coder) না বলে ওয়ার্কার(Worker) হিসেবে অভিহিত করা হয়। ঠিক একইভাবে ক্রেতাদের (Buyer) নাম পরিবর্তন করে তাদেরকে এমপ্লয়ার (Employer) হিসেবে ডাকা হয়।
সাইটের নতুন ডিজাইনটি অত্যন্ত দৃষ্টিন্দন হয়েছে এবং তা ওয়েব ২.০ ধারা অনুযায়ী তৈরি করা হয়েছে। পূর্বে সকল লিংক যেখানে বাম দিকের কলামে ছিল সেগুলোকে উপরে Employers, Workers এবং Affiliates মেন্যুতে নিয়ে আসা হয়েছে। সাইটে নতুন ৭১ টি প্রজেক্টের বিভাগ যুক্ত করা হয়েছে। পছন্দের বিভাগের নতুন নতুন প্রজেক্ট দেখতে হলে Project Filter নামক একটি সেটিং ঠিক করে নিতে হবে। এজন্য লগইন করার পর উপরের মেন্যুতে এই ক্রম অনুযায়ী ক্লিক করতে হবে - Workers > My Account > My registration/settings > My filters। যাদের নতুন মেন্যুটি পছন্দ হয়নি তারা ইচ্ছে করলে পূর্বের মত একটি কলামে সকল লিংক দেখতে পারবেন। এজন্য Workers > My Account > Site layout > Move menu তে ক্লিক করতে হবে।
অনেকেই হয়ত জানেন না যে এই সাইটে oDesk বা অন্যন্য সাইটের মত ঘন্টা হিসেবে কাজের জন্য Pay-for-time নামক একটি আলাদা পেমেন্ট পদ্ধতি রয়েছে। নতুন সাইটে এই পদ্ধতিতেও অনেকগুলো পরিবর্তন আনা হয়েছে। যার মধ্য উল্লেখযোগ্য হচ্ছে এমপ্লয়ারদের কাছে পদ্ধতিটিকে আরো গুরুত্বপূর্ণভাবে উপস্থাপন করা, ওয়েবক্যামকে ঐচ্ছিক করা এবং আরো নানা পরিবর্তন। যার উদ্দেশ্য হচ্ছে সাইটে এই ধরনের কাজের সংখ্যা বৃদ্ধি করা।
ঘন্টা হিসেবে কাজ করার জন্য AccuTimeCard নাম একটি টাইমকার্ড সফটওয়্যার ব্যবহার করতে হয়। সফটওয়্যারটি সাইটের যেকোন পৃষ্ঠার নিচে একটি লিংকের মাধ্যমে পাওয়া যায়। প্রজেক্ট চলাকালীন সময়ে এই সফটয়্যারটি চালু করে রাখতে হয় যা একটি নির্দিষ্ট সময় পর পর ওয়ার্কারের ডেস্কটপের ছবি এমপ্লয়ারকে পাঠাতে থাকে। আরো নিশ্চয়তার জন্য সফটওয়্যারটি ওয়ার্কারের ওয়েবক্যাম থেকেও ছবি পাঠাতে পারে। Pay-for-time পদ্ধতিতে কাজের প্রক্রিয়া হচ্ছে নিম্নরূপ -
১) প্রথমে এমপ্লয়ার একজন ওয়ার্কারকে তার প্রজেক্টে কাজ করার জন্য নির্ধারণ করবে এবং প্রজেক্টের টাকা সাইটে জমা রাখবে, যা এস্ক্রো (Escrow) নামে পরিচিত।
২) কাজ শুরু করার পূর্বে ওয়ার্কার তার কম্পিউটারে টাইমকার্ড সফটওয়্যারটি চালু করবে, যাকে Punch in বলা হয়।
৩) সফটওয়্যারটি একটি নির্দিষ্ট সময় পরপর ওয়ার্কারের ওয়েবক্যামের ছবি এবং ডেস্কটপের স্ক্রীণশট এমপ্লয়ারকে পাঠাবে, ফলে ওই সময় ওয়ার্কার কোন কোন কাজ করেছে তা এমপ্লয়ার নিশ্চিতভাবে জানতে পারবে।
৪) কাজ চলাকালীন সময়ে এমপ্লয়ার এবং ওয়ার্কার উভয়েই কাজের সাপ্তাহিক এবং দৈনিক অবস্থা দেখতে পারবে।
৫) কাজ করার পূর্বে ওয়ার্কার যদি কখনও টাইমকার্ড চালু করতে ভুলে যায় তাহলে পরে একটি মেন্যুয়াল এন্ট্রি দেয়া যাবে। তবে এমপ্লয়ার ইচ্ছে করলে সেই সময়টি গ্রহণ নাও করতে পারে।
৬) এভাবে একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ওয়ার্কার কাজ করতে পারবে। টাইমকার্ডে উল্লেখিত সময় শেষ হবার পর কাজ যাচাই করার জন্য এমপ্লয়ার ৩ দিন সময় পাবে। এই সময়ের মধ্যে কাজ যাচাই না করলে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে গ্রহণ হয়ে যাবে। এরপর এস্ক্রোতে জমা থাকা টাকা ওয়ার্কারের একাউন্টে চলে আসবে।
৭) এমপ্লয়ার যদি মনে করে ওয়ার্কার কাজ না করে শুধু শুধু সময় নষ্ট করেছে সেক্ষেত্রে সে সাইটের কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করতে পারবে, যা Arbitration নামে পরিচিত। সাইটের কর্তৃপক্ষ অভিযোগের সত্যতা পেলে এমপ্লয়ারকে টাকা ফেরত দিয়ে দিবে এবং ওয়ার্কারকে একটি বাজে রেটিং দিবে।
সাইট থেকে অর্থ উত্তোলনের ক্ষেত্রে একটি ছোট পরিবর্তন করা হয়েছে। যারা ইতিমধ্যে Payoneer কর্তৃক ডেবিট মাস্টারকার্ড ব্যবহার করছেন, তাদেরকে নতুন সাইটের জন্য নতুন লোগো সম্বলিত একটি কার্ড সরবরাহ করা হয়েছে। কার্ডটিতে রেন্ট-এ-কোডার শব্দের পরিবর্তে ভি-ওয়ার্কার ব্যবহার করা হয়েছে।
ভি-ওয়ার্কার সাইটের এই নতুন পরিবর্তনগুলো নিঃসন্দেহে একটি চমৎকার উদ্দ্যোগ। তবে বিড করার পদ্ধতি, কাজ জমা দেবার পদ্ধতি, অর্থ উত্তোলনের ক্ষেত্রে তেমন কোন পরিবর্তন আনা হয় নি। সাইটের এই বিষয়গুলো নিয়ে এর আগে “কম্পিউটার জগৎ” এ “রেন্ট-এ-কোডার” শিরোনামে আলোচনা করা হয়েছে, যা এই লিংকে পাওয়া যাবে। ভি-ওয়ার্ক সাইটে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী সাইটকে উন্নত করার কাজ চলছে এবং পর্যায়ক্রমে আরো ৫০০ টি নতুন পরিবর্তন আনা হবে।
লেখক - মোঃ জাকারিয়া চৌধুরী
বিঃদ্রঃ - এই লেখাটি "মাসিক কম্পিউটার জগৎ" ম্যাগাজিনের "জুলাই ২০১০" সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছে।
২০০১ সালে রেন্ট-এ-কোডার যখন প্রতিষ্ঠিত হয় তখন তাদের মূল লক্ষ্য ছিল প্রোগ্রামার বা কোডারদের জন্য একটি মার্কেটপ্লেসের ব্যবস্থা করা। ২০১০ সালে এসে সাইটটি এখন আর কেবলমাত্র কোডারদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং তা গ্রাফিক্স ডিজাইনার, লেখক, অনুবাদক, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর এবং আরো অসংখ্য পেশাজীবিদের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। তাই আজ সেই সকল ফ্রিল্যান্সারদেরকে আর কোডার (Coder) না বলে ওয়ার্কার(Worker) হিসেবে অভিহিত করা হয়। ঠিক একইভাবে ক্রেতাদের (Buyer) নাম পরিবর্তন করে তাদেরকে এমপ্লয়ার (Employer) হিসেবে ডাকা হয়।
সাইটের নতুন ডিজাইনটি অত্যন্ত দৃষ্টিন্দন হয়েছে এবং তা ওয়েব ২.০ ধারা অনুযায়ী তৈরি করা হয়েছে। পূর্বে সকল লিংক যেখানে বাম দিকের কলামে ছিল সেগুলোকে উপরে Employers, Workers এবং Affiliates মেন্যুতে নিয়ে আসা হয়েছে। সাইটে নতুন ৭১ টি প্রজেক্টের বিভাগ যুক্ত করা হয়েছে। পছন্দের বিভাগের নতুন নতুন প্রজেক্ট দেখতে হলে Project Filter নামক একটি সেটিং ঠিক করে নিতে হবে। এজন্য লগইন করার পর উপরের মেন্যুতে এই ক্রম অনুযায়ী ক্লিক করতে হবে - Workers > My Account > My registration/settings > My filters। যাদের নতুন মেন্যুটি পছন্দ হয়নি তারা ইচ্ছে করলে পূর্বের মত একটি কলামে সকল লিংক দেখতে পারবেন। এজন্য Workers > My Account > Site layout > Move menu তে ক্লিক করতে হবে।
অনেকেই হয়ত জানেন না যে এই সাইটে oDesk বা অন্যন্য সাইটের মত ঘন্টা হিসেবে কাজের জন্য Pay-for-time নামক একটি আলাদা পেমেন্ট পদ্ধতি রয়েছে। নতুন সাইটে এই পদ্ধতিতেও অনেকগুলো পরিবর্তন আনা হয়েছে। যার মধ্য উল্লেখযোগ্য হচ্ছে এমপ্লয়ারদের কাছে পদ্ধতিটিকে আরো গুরুত্বপূর্ণভাবে উপস্থাপন করা, ওয়েবক্যামকে ঐচ্ছিক করা এবং আরো নানা পরিবর্তন। যার উদ্দেশ্য হচ্ছে সাইটে এই ধরনের কাজের সংখ্যা বৃদ্ধি করা।
ঘন্টা হিসেবে কাজ করার জন্য AccuTimeCard নাম একটি টাইমকার্ড সফটওয়্যার ব্যবহার করতে হয়। সফটওয়্যারটি সাইটের যেকোন পৃষ্ঠার নিচে একটি লিংকের মাধ্যমে পাওয়া যায়। প্রজেক্ট চলাকালীন সময়ে এই সফটয়্যারটি চালু করে রাখতে হয় যা একটি নির্দিষ্ট সময় পর পর ওয়ার্কারের ডেস্কটপের ছবি এমপ্লয়ারকে পাঠাতে থাকে। আরো নিশ্চয়তার জন্য সফটওয়্যারটি ওয়ার্কারের ওয়েবক্যাম থেকেও ছবি পাঠাতে পারে। Pay-for-time পদ্ধতিতে কাজের প্রক্রিয়া হচ্ছে নিম্নরূপ -
১) প্রথমে এমপ্লয়ার একজন ওয়ার্কারকে তার প্রজেক্টে কাজ করার জন্য নির্ধারণ করবে এবং প্রজেক্টের টাকা সাইটে জমা রাখবে, যা এস্ক্রো (Escrow) নামে পরিচিত।
২) কাজ শুরু করার পূর্বে ওয়ার্কার তার কম্পিউটারে টাইমকার্ড সফটওয়্যারটি চালু করবে, যাকে Punch in বলা হয়।
৩) সফটওয়্যারটি একটি নির্দিষ্ট সময় পরপর ওয়ার্কারের ওয়েবক্যামের ছবি এবং ডেস্কটপের স্ক্রীণশট এমপ্লয়ারকে পাঠাবে, ফলে ওই সময় ওয়ার্কার কোন কোন কাজ করেছে তা এমপ্লয়ার নিশ্চিতভাবে জানতে পারবে।
৪) কাজ চলাকালীন সময়ে এমপ্লয়ার এবং ওয়ার্কার উভয়েই কাজের সাপ্তাহিক এবং দৈনিক অবস্থা দেখতে পারবে।
৫) কাজ করার পূর্বে ওয়ার্কার যদি কখনও টাইমকার্ড চালু করতে ভুলে যায় তাহলে পরে একটি মেন্যুয়াল এন্ট্রি দেয়া যাবে। তবে এমপ্লয়ার ইচ্ছে করলে সেই সময়টি গ্রহণ নাও করতে পারে।
৬) এভাবে একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ওয়ার্কার কাজ করতে পারবে। টাইমকার্ডে উল্লেখিত সময় শেষ হবার পর কাজ যাচাই করার জন্য এমপ্লয়ার ৩ দিন সময় পাবে। এই সময়ের মধ্যে কাজ যাচাই না করলে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে গ্রহণ হয়ে যাবে। এরপর এস্ক্রোতে জমা থাকা টাকা ওয়ার্কারের একাউন্টে চলে আসবে।
৭) এমপ্লয়ার যদি মনে করে ওয়ার্কার কাজ না করে শুধু শুধু সময় নষ্ট করেছে সেক্ষেত্রে সে সাইটের কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করতে পারবে, যা Arbitration নামে পরিচিত। সাইটের কর্তৃপক্ষ অভিযোগের সত্যতা পেলে এমপ্লয়ারকে টাকা ফেরত দিয়ে দিবে এবং ওয়ার্কারকে একটি বাজে রেটিং দিবে।
সাইট থেকে অর্থ উত্তোলনের ক্ষেত্রে একটি ছোট পরিবর্তন করা হয়েছে। যারা ইতিমধ্যে Payoneer কর্তৃক ডেবিট মাস্টারকার্ড ব্যবহার করছেন, তাদেরকে নতুন সাইটের জন্য নতুন লোগো সম্বলিত একটি কার্ড সরবরাহ করা হয়েছে। কার্ডটিতে রেন্ট-এ-কোডার শব্দের পরিবর্তে ভি-ওয়ার্কার ব্যবহার করা হয়েছে।
ভি-ওয়ার্কার সাইটের এই নতুন পরিবর্তনগুলো নিঃসন্দেহে একটি চমৎকার উদ্দ্যোগ। তবে বিড করার পদ্ধতি, কাজ জমা দেবার পদ্ধতি, অর্থ উত্তোলনের ক্ষেত্রে তেমন কোন পরিবর্তন আনা হয় নি। সাইটের এই বিষয়গুলো নিয়ে এর আগে “কম্পিউটার জগৎ” এ “রেন্ট-এ-কোডার” শিরোনামে আলোচনা করা হয়েছে, যা এই লিংকে পাওয়া যাবে। ভি-ওয়ার্ক সাইটে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী সাইটকে উন্নত করার কাজ চলছে এবং পর্যায়ক্রমে আরো ৫০০ টি নতুন পরিবর্তন আনা হবে।
লেখক - মোঃ জাকারিয়া চৌধুরী
বিঃদ্রঃ - এই লেখাটি "মাসিক কম্পিউটার জগৎ" ম্যাগাজিনের "জুলাই ২০১০" সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছে।
0 comments:
Post a Comment
প্রতিটি পোস্ট পড়ার পর নিজের মতামত যানাতে ভুলবেন না । তবে এমন কিছু মন্তব্য করবেন না যাতে লেখকের মনে আঘাত করে ।